দাবা খেলার কয়েকজন গ্র্যান্ডমাস্টারদের সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো: ————-
নিয়াজ মোরশেদ
ভূমিকা :-
বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুপরিচিত দাবাড়ু হলেন নিয়াজ মোরশেদ। ইনি জন্মগ্রহণ করেন ১৩ মে ১৯৬৬ সালে। ইনি সমস্ত মানুষের কাছে ‘মোর্শেদ’ নাম পরিচিত। তিনি ক্রীড়াক্ষেত্রে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক ‘স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ‘সম্মানিত হন। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশগুলো থেকে ‘প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার ‘খেতাবধারী হবার অসামান্য কৃতিত্বের দাবিদার আর কেউ নন ,তিনি হলেন নিয়াজ মোরশেদ।
ক্রীড়াক্ষেত্রে বিজয়ীর তালিকা :-
নর্ম অর্জন | সাল | স্থান |
১ম নর্ম অর্জন করেন | ১৯৮৪ | যুগোশ্লোভিয়ায় অনুষ্ঠিত বেলা ক্রোভা ওপেনে।
|
২ য় নর্ম অর্জন করেন | ১৯৮৬ |
১৯৮৭ সালে ‘বিশ্ব দাবা সংস্থা ‘(ফিদে )নিয়াজ মোরশেদ কে মাত্র ২১ বছর বয়সে গ্রেডমাস্টারের মর্যাদা দেওয়া হয়। তাই বাংলাদেশে তাকে অর্থাৎ, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার এবং এশিয়ার ৫ ম গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে খ্যাতি প্রদান করে।
তিনি ‘৮৫’তে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘ক্যাপস্টেন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ‘এবং ‘৮৬ ‘তে কলকাতা গ্র্যান্ড মাস্টার্স টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করেন।
আন্তর্জাতিকভাবে বিজয়ের সাফল্য :–
নিয়াজ ১৯৮২ সালে বিশ্ব জুনিয়ার চ্যাম্পিয়ানশিপে অংশগ্রহণ করে ব্যর্থ হন। তবে তার খেলা ‘ডেনমার্কের লার্স স্কানডর্ফের ‘বিরুদ্ধে অনুষ্ঠেয় খেলাটির টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সেরা খেলা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে কলকাতায় প্রথম বারের মতো যেকোনো পর্যায়ের আন্তর্জাতিক দাবা খেলায় নিয়াজ মোর্শেদ অংশগ্রহণ করেন। তিনি “এশিয়ান জুনিয়র চেম্পিয়ানশিপ” যা ‘৮১’ তে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেখানে তিনি ‘প্রথম’ স্থান অধিকার করলেও’ টাইব্রেকে’ ‘দ্বিতীয়’ স্থান অধিকার করেন। এছাড়াও ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের ”শারজায় ‘অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় ও নিয়াজ মোরশেদ ‘দ্বিতীয় স্থান’ অধিকার করেন এবং এই বছরই তিনি ”ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার (আই এম )” নর্ম অর্জন করেন।
নিয়াজ মোরশেদের প্রতিনিধিত্ব গ্রহণ :-
খেলা | সাল
|
যে দেশের পক্ষে |
দাবা অলিম্পিয়ান। | ১৯৮৪ | বাংলাদেশ |
দাবা অলিম্পিয়ান। | ১৯৯০ | বাংলাদেশ |
দাবা অলিম্পিয়ান। | ১৯৯৪ | বাংলাদেশ |
দাবা অলিম্পিয়ান। | ১৯৯৬ | বাংলাদেশ |
দাবা অলিম্পিয়ান। | ২০০২ | বাংলাদেশ |
দাবা অলিম্পিয়ান। | ২০০৪ | বাংলাদেশ |
প্রথম সাফল্য :–
নিয়াজ মোরশেদ মাত্র নয় বছর বয়সে ‘জাতীয় দাবা’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। যদিও তিনি ওই প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করতে পারে নি তবে সকল মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং উপস্থিত সকলের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। আর মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের শীর্ষস্থান অধিকারী দাবাড়ুদের মধ্যে একজন হিসেবে পরিচিত হন। নিয়াজ মোরশেদ ১৯৭৯ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত একাধারে চার বছর জাতীয় ‘চ্যাম্পিয়ান ‘হন।
প্রথম জীবন :–
বাংলাদেশের ঢাকা শহরের বাসিন্দা মঞ্জুর মোরশেদ ও নাজমা আহমেদের গর্বিত সন্তান হলেন নিয়াজ মোরশেদ। অত্যন্ত ছোট বেলা থেকে বড়োদের সাথে সাথে দাবা খেলার প্রতি তার গভীর অনুরাগ জন্মে। এও জানা যায় যে ,ছোট বেলায় নিয়াজ মোরশেদ আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গেও দাবা খেলেন। তৎকালীন জাতীয় চ্যাম্পিয়ান (প্রতিবেশী )জামিলুর রহমান তাকে দাবা শিক্ষার উপযোগী আনুকূল্য ও সহচর্য অর্থাৎ প্রশিক্ষণ দিতেন। পরে তিনি ১৯৮৩ সালে ‘সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয় ‘থেকে এস .এস .সি .এবং ৮৫ সালে ‘ঢাকা কলেজ ‘থেকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচ .এস .সি )পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
সাময়িক বিরতি:—
নিয়াজ মোরশেদ কিছু সময়ের জন্য দাবা খেলায় সাময়িকভাবে বিরতি নেন। তিনি গ্রেন্ডমাস্টারের খেতাব অর্জনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেনফিয়ার পেনসালভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেন। পড়াশুনা থাকাকালীন তিনি ছোটোখাটোভাবে খেলায় অংশগ্রহণ করতেন। তারপর ‘স্নাতক ‘ ডিগ্রি অর্জনের পর পুনরায় তিনি দাবা ক্রীড়ায় মনোনিবেশ করেন। নতুন প্রজন্মের দাবা খেলোয়াড়দের সাথে অত্যন্ত গভীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুখোমুখি থেকে ৯২ -এ ফিলিপাইনের সেবু’তে গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্ট -এ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন এবং ৯১ -এ ভারতের গোডরিকে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ৯৩ -এ কাতারের দোহা দাবা উৎসবে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। নিয়াজ মোরশেদ ২০০৪ সালের কমনওয়েলথ দাবা প্রতিযোগিতায় টাইব্রেকারে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।।
নিজস্ব কলাকৌশল :–
গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ খুবই সহজ উপায়ে দাবা ক্রীড়া সম্পন্ন করতেন। তিনি সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ের পদ্ধতিতে অগ্রসর হতেন। তিনি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ছোটো ছোটো সুবিধা নিয়ে নিজে সাফল্য অর্জন করতেন। সবশেষে বলা যায় এই যে ,নিয়াজ মোরশেদ নিজের সর্ব চেষ্টা ,কলাকৌশলতা ,বুদ্ধি এবং শিক্ষা ও জেদের দ্বারা দাবা ক্রীড়াতে সাফল্য অর্জন করেছেন ও গ্র্যান্ডমাস্টার এবং সারাবিশ্বের মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন ,ছিলেন এবং থাকবেন।
” বিশ্বনাথন আনন্দ “
জন্ম -১১ ডিসেম্বর ,১৯৬৯ চেন্নাই (প্রাক্তন মাদ্রাজ ),ভারত।
জাতীয়তা -ভারতীয়।
নাগরিকত্ব -ভারত
পেশা -খেলা।
পরিচিত -দাবা খেলোয়াড়।
পুরস্কার -পদ্মবিভূষণ (২০০৮ )
ভূমিকা :-
বিখ্যাত ভারতীয় দাবা গ্র্যান্ডমাস্টারদের মধ্যে ‘বিশ্বনাথন আনন্দ ‘ হলেন এক অন্যতম প্রতীভা। বিশ্বনাথন আনন্দ ডিসেম্বর ১১,১৯৬৯ সালে চেন্নাইতে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বনাথন আনন্দ ১৯৯৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্বের সেরা তিন ধ্রুপদী দাবাড়ুদের মধ্যে একজন এবং একই সময়কালের বেশিরভাগ অংশজুড়ে বিশ্বের সেরা দ্রুতগতির দাবাড়ু হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। ইলোরেটিংয়ের ইতিহাসে ২৮০০ পয়েন্টের বেশি পাওয়া দাবাড়ু চার জনদের মধ্যে একজন হলেন বিশ্বনাথন আনন্দ। ২০১২ সালের জানুয়ারী মাসে ফিদে তালিকা অনুযায়ী বিশ্বনাথন আনন্দের ইলো রেটিং ২৭৯৯ এবং র্যাংকিং-এ আনন্দের অবস্থান ভ্লাদিমির ক্রামনিকের পেছনে অর্থাৎ চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে ।
সম্মানিত :-
শচীন তেন্ডুলকর এবং বিশ্বনাথন আনন্দ যুগ্মভাবে প্রথমবার কোনো ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পদ্মবিভূষণ ‘সম্মান পান।২০০৮ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পদ্মবিভূষণ এ সম্মানিত হন।
” পুরস্কার “ | ||
পূর্বসূরী আলেকজান্ডার খালিফম্যান | ফিদে বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ান (২০০০-২০০২) | উত্তরসূরী রাসল্যান পোনোমারিওভ। |
পূর্বসূরী গ্যারী কাসপারভ | ওয়ার্ল্ড রাপিড চেজ চ্যাম্পিয়ান (২০০৩-২০০৯) | উত্তরসূরী লেভন এরোনিয়ান। |
স্বীকৃতি
|
||
পূর্বসূরী ভ্যাসেলিন তোপালব
ভ্লাদিমির ক্রামনিক ম্যাগনাস কার্লসেন ম্যাগনাস কার্লসেন |
বিশ্ব দাবায় ১ ম
এপ্রিল ১ ,২০০৭ – ডিসেম্বর ৩১ ,২০০৭ এপ্রিল ১ ,২০০৮ – সেপ্টেম্বর ৩০ ,২০০৮ নভেম্বর ১ ,২০১০ -ডিসেম্বর ৩১ ,২০১০ মার্চ ১ ,২০১১ – জুন ৩০ ,২০১১
|
উত্তরসূরী ভ্লাদিমির ক্রামনিক
ভ্যাসেলিন তোপালব ম্যাগনাস কার্লসেন ম্যাগনাস কার্লসেন |
বিশ্বনাথন আনন্দের সমন্ধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:—
- ১৯৮৭ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে বিশ্বনাথন আনন্দ বিশ্ব জুনিয়ার দাবা চ্যাম্পিয়ান-এর সম্মান অর্জনকরেন।
- ২১ মাস যাবৎ তিনি সর্বোচ্চ রেটিং ধারী খেলোয়াড় ছিলেন।
- বিশ্বনাথন আনন্দের দাবা খেলায় হাতে খড়ি ঘটে তাঁর মায়ের মাধ্যমে।
- তিনি নিজেই বিশ্বব্যাপী অগণিত দাবাড়ুর আদর্শ। এবং তিনি নিজেই আদর্শ হিসেবে মানেন আমেরিকান গ্র্যান্ডমাস্টার ববি ফিশারকে।
- বিশ্বের মাত্র চতুর্থ দাবাড়ু হিসেবে তিনি ২৮০০ -এর বেশি রেটিং প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
- প্রতি বছরের সেরা দাবাড়ুকে দাবা অস্কার দেওয়া হয়। তিনি ৬ বার দাবা অস্কার লাভ করেছিলেন।
- দাবা ছাড়াও জ্যোতির্বিদ্যা এবং ইতিহাসেও তাঁর ভীষণ আগ্রহ আছে এবং এ সম্পর্কেও তিনি জ্ঞান রাখেন।
- বিশ্বনাথন আনন্দের লেখার হাতও বেশ ভালো। তাঁর লেখা বই ‘My Best Games of Chess ‘কে ১৯৯৮ সালে ব্রিটিশ চেস ফ্রেডারেশন ‘বছরের সেরা বই ‘মর্যাদায় ভূষিত হয়।
- মাতৃভাষা তামিল এবং ইংরেজি ছাড়াও তিনি ফ্রেঞ্জ ,জার্মান এবং স্পেনিশ ভাষায় কথা বলতে পারতেন।
- এছাড়াও তিনি সামগ্রিকভাবে একজন ভদ্রলোক হিসেবে খ্যাত এবং তাঁর ব্যবহারের জন্য প্রায় সব এলিট দাবাড়ুই তাঁকে ভীষণ পছন্দ করেন।
” রানী হামিদ “
- জন্ম -সৈয়দা জাসিমুন্নেসা খাতুন। ফেব্রুয়ারী ২৩ ,১৯৪৪ সিলেট ,বাংলাদেশ।
- পেশা -খেলা।
- জাতীয়তা -বাংলাদেশী।
- পরিচিতিকরণ -দাবা খেলোয়াড় ।
- নাগরিকত্ব -বাংলাদেশ।
- দাম্পত্য সঙ্গী -মোহম্মদ আব্দুল হামিদ।
- সন্তান -কায়সার হামিদ।
- পুরস্কার -স্বর্ণ পদক ,কমনওয়েলথ দাবা চ্যাম্পিয়ান -২০১৫ ,ব্রিটিশ মহিলা দাবা পুরস্কার।
ভূমিকা :-
রানী হামিদ ২৩ শে ফেব্রুয়ারী ,১৯৪৪ সালে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বাংলাদেশী দাবাড়ু ছিলেন। রানী হামিদের সম্পূর্ণ নাম হলো সৈয়দা জাসিমুন্নেসা খাতুন এবং ডাক নাম রানী। ১৯৮৫ সালে রানী ফিদে আন্তর্জাতিক ‘মহিলা মাস্টার’ -আর সম্মান অর্জন করেন। রানী হামিদের সন্তান কায়সার হামিদ ১৯৮০ -আর দশকে বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতের খ্যাতনামা ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। রানী বাংলাদেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক দাবা মাস্টার। বিয়ের পর তিনি স্বামীর নাম যুক্ত করে রানী হামিদ হন এবং ক্রীড়া জগতে তিনি রানী হামিদ নামেই পরিচিত। রানী তিন বার ব্রিটিশ মহিলা দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান হন।
প্রথম জীবন ও শিক্ষা জীবন :-
রানী হামিদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী সিলেট জেলায়। পরিবারে ৮ ভাইবোন এবং মা বাবা’র সাথে রানী হামিদের শৈশবকাল খুব আনন্দে কেটেছিল। বাবা সৈয়দ মমতাজ আলী। তিনি পেশায় পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। মা মোসাম্মাৎ কামরুন্নেসা খাতুন ছিলেন গৃহিনী। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে রানী হামিদ তৃতীয় ছিলেন। ১৯৫২ সালে রানী সরাসরি দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন চট্টগ্রাম নন্দনকানন গার্লস হাইস্কুলে। ১৯৫৪ স্কুল বদল করে তিনি কুমিল্লা মিশনারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন। পরবর্তীকালে পঞ্চম ,ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণীতে পড়েন কুমিল্লার ফয়জুন্নেসা গার্লস হাইস্কুলে। রাজশাহীর একটি স্কুলে অষ্টম ও নবম শ্রেণী পার করেন। রানী ‘ঢাকার ইডেন কলেজ ‘থেকে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এবং রানী ১৯৬০ সালে সিলেট বালিকা বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হন। এরই মধ্যে ১৯৫৯ সালে রানী হামিদ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এম .এ .হামিদকে বিবাহ করেন। রানী হামিদ বিয়ের পর ইডেন কলেজ থেকেই প্রাইভেট ডিগ্রি পরীক্ষা দেন ও কৃতকার্য হন।
“পুরস্কার “
- স্বর্ণ পদক ,কমনওয়েলথ দাবা চ্যাম্পিয়ানশিপ-২০১৫
- ব্রিটিশ মহিলা দাবা প্রতিযোগিতা -১৯৮৩ ,১৯৮৫ ,১৯৮৯
কর্মজীবন :-
রানী হামিদ বিয়ের পর পেশাদারীভাবে দাবা খেলা শুরু করেন। খেলাধুলোর প্রতি রানীর স্বামী মোহাম্মাদ আব্দুল হামিদের উৎসাহ এবং আগ্রহ থাকায় তিনি দাবা খেলার প্রতি জোর পান। রানী হামিদ আন্তর্জাতিক মাস্টার নর্ম অর্জনকারী প্রথম বাংলাদেশী মহিলা দাবাড়ু। ১৯৭৪ -৭৫ সালে ঢাকা কন্টেনমেন্টের কোয়ার্টারে থাকার সময় জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ান ডাঃ আকমল হোসেনের প্রতিবেশী ছিলেন রানী হামিদ। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ দাবা ফেডারেশন নারীদের জন্য প্রথমবারের মতো আলাদাভাবে দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। পরবতীকালে ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালেও একই আয়োজন হয় এবং তিনবারই রানী হামিদ চ্যাম্পিয়ান হন। ১৯৮১ সালে ভারতের হায়দ্রাবাদে প্রথম এশিয়া চ্যাম্পিয়ানশিপে অংশগ্রহণ করে সুনাম খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত কাসেদ আন্তর্জাতিক মহিলা দাবা খেলায় যৌথ চ্যাম্পিয়ান হন রানী হামিদ। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি ছয়বার জাতীয় মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়ানশিপে চ্যাম্পিয়ান হন। এছাড়াও ১৯৮৮ ,১৯৯০ ,১৯৯২ ,১৯৯৬ ,১৯৯৮ ,১৯৯৯ ,২০০১,২০০৪ ও ২০০৬সালে জাতীয় মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়ানশিপে চ্যাম্পিয়ান হন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত রানী মোট ১৫ বার জাতীয় মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়ানশিপে চ্যাম্পিয়ানের গৌরব অর্জন করেছেন। দাবার বিশ্বকাপ খ্যাত “দাবা অলিম্পিয়াড “-এ তিনি অসংখ্যবার বাংলাদেশের হয়ে অংশগ্রহণ করে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। কমনওয়েলথ দাবা চাম্পিয়ানশিপ ‘২০১৫ ‘তে রানী হামিদ বাংলাদেশের হয়ে স্বর্ণ পদক জয় করেন।